রবিবার, দুপুর ১:০১
২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি,

রোজাদারের প্রার্থনা বিফলে যায় না

পুণ্য অর্জন ও ক্ষমা প্রার্থনার মাস রমজান। এ মাসে প্রতিটি ভালো কাজের ১০ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রোজাদার ব্যক্তির অতীত গুনাহ মাফের ঘোষণা রয়েছে। সবচেয়ে বড় পাওয়া রোজাদারের প্রার্থনা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। মহানবী (সা.) বলেন, ‘সিয়াম পালনকারীর প্রার্থনা ফেরত দেওয়া হয় না।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৩/৭)। অন্য হাদিসে এসেছে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ১. রোজাদারের দোয়া ইফতার করা পর্যন্ত, ২. ন্যায়পরায়ণ বাদশাহর দোয়া, ৩. মাজলুমের দোয়া। (মুসনাদে আহমদ : ৯৭৪৩)।

পবিত্র কুরআনে সুরা বাকারায় ধারাবাহিকভাবে রমজান ও রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। এর অব্যবহিত পরই আল্লাহ তাঁর নবীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে, (তাদের বলো) আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, আমি তাদের প্রার্থনা কবুল করি, যখন তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে।’ (সুরা বাকারা : ১৮৬)। এ থেকেও বুঝে আসে রমজান মাসে দোয়ার বিশেষ মর্যাদা ও ফজিলত রয়েছে।

দোয়া বা প্রার্থনায় মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা নিহিত। আল্লাহ তাআলা ওই মুহূর্তটিকে অধিক পছন্দ করেন যখন বান্দা মানবসভ্যতার চরম বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ ও সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে, তাঁর কাছে মাগফিরাত ও নাজাত কামনা করে। নবী করিম (সা.) রমজান মাসে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা সম্পর্কে বলেছেন, এ মাসে তোমরা চারটি কাজ অধিক পরিমাণে কর, তন্মধ্যে দুটি কাজ এমন, যা দ্বারা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যাবে। আর অপর দুটি এমন যা থেকে তোমরা মুখাপেক্ষীহীন হতে পারবে না। প্রথম দুটি হলো ১. বেশি বেশি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর জিকির করা; ২. আল্লাহর কাছে মাগফিরাত তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর যে দুটি কাজ না করে আমাদের কোনো উপায় নেই তা হলো ১. জান্নাত চাওয়া, ২. জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।

ইফতারের পূর্ব-মুহূর্তের দোয়ার বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই ইফতারের সময় সিয়াম পালনকারীর দোয়া কবুল হয়।’ (বায়হাকি)। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘ইফতারের সময় আল্লাহ বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর রমজানের প্রতি রাতেও। সিয়াম পালনকারী প্রত্যেক বান্দার দোয়া কবুল হয়।’ (মুসনাদ আহমদ)। হাদিসে কুদসিতে আছেÑরোজা কেবল আল্লাহর জন্য, তাই রোজার পুরস্কার আল্লাহ নিজেই দেবেন।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বান্দাদের বারবার তাঁর কাছে চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার : ৫৪)।

পবিত্র রমজানের দিন-রাত ইবাদত বন্দেগি ও ক্ষমা প্রার্থনার দিনরাত। তাই নির্ধারিত ইবাদত ছাড়াও সুযোগ পেলেই আল্লাহর দরবারে দোয়া-মোনাজাতে বিশেষভাবে মনোনিবেশ করা চাই। আমাদের কোন দোয়া কখন কবুল হয়Ñবলা তো যায় না। আল্লাহ আমাদের রোজা কবুল করুন, অতীত জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দিন।

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *