মঙ্গলবার, রাত ১২:৫০
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি,

যমুনায় রাতভর ঢল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে ছাত্রজনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক ||

রাত পেরিয়ে যায়, ঘড়ির কাঁটা টপকে ফেলে মধ্যরাত—তবু রাজপথে থামেনি আওয়াজ। রাজধানীর রমনার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন “যমুনা”র সামনে তখন যেন আরেকটি জনপদ। সেখানে রাত ১০টার পর থেকেই জড়ো হতে শুরু করে হাজারো কণ্ঠ, হাজারো ক্ষোভ। লক্ষ্য একটাই—আওয়ামী লীগের বিচার এবং দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা।

 

ছাত্র ও নাগরিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার হাতে এসে দাঁড়ায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে। কারও চোখে ছিল দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, কারও মুখে ছিল রাজপথে ন্যায়ের দৃঢ় প্রত্যয়।

 

এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিভিন্ন ছাত্র ও নাগরিক সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। সংগঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস, ছাত্র জমিয়ত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ, অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, জুলাই ঐক্য। এছাড়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কয়েকজন নেতাকেও সেখানে দেখা গেছে।

 

বিক্ষোভকারীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ও নানা ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান সহকারে রমনা এলাকা মুখরিত করে তোলে। তাদের হাতে থাকা ব্যানার ও মুখে থাকা স্লোগানে বারবার উঠে আসে একটি মূল দাবি—”আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো।”

 

স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল “ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো”, “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে”, “গোলামি না আজাদী—আজাদী আজাদী”, “একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর”, “আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও”।

 

প্রথমে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ-র নেতৃত্বে অবস্থান শুরু হয়। এরপর রাত ১টার দিকে নাহিদ ইসলাম-এর নেতৃত্বে এনসিপির একটি বিশাল মিছিল এসে যোগ দেয়, যার ফলে যমুনার সামনে হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতার জমায়েত তৈরি হয়।

 

এই অবস্থানের কারণে রমনা এলাকায় যান চলাচলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি।

 

নেতাকর্মীরা বলেন, “আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে গণবিরোধী ও দমনমূলক রাজনীতি করে আসছে। আমাদের ভাইয়েরা গুম হয়েছে, খুন হয়েছে—এর কোনো বিচার হয়নি। এখন সময় এসেছে রাজপথেই নিষ্পত্তির।”

 

তারা স্পষ্ট দাবি জানান—আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে আন্দোলনকারীরা।

 

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (ভোর ৭টা) কর্মসূচি চলমান ছিল এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

 

-কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *