ফাইল ছবি, গত শতাব্দীতে ধর্মীয় ইস্যুকে কেন্দ্র করে উপমহাদেশে এমন গণআন্দোলনের দ্বিতীয় কোনো দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় না।
বিশেষ প্রতিবেদন, ৬ এপ্রিল ২০২৫
আজ ঐতিহাসিক ৬ এপ্রিল—হেফাজতের লংমার্চ দিবস। ২০১৩ সালের এই দিনে বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের এক নজিরবিহীন গণজাগরণ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে এটিই একমাত্র আন্দোলন, যেখানে জনগণের ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বতঃসিদ্ধ অংশগ্রহণ। একটি লংমার্চে অংশগ্রহণের জন্য মানুষ যে আবেগ, যে ত্যাগ, যে বিসর্জন নিয়ে এগিয়ে এসেছিল—তা ইতিহাসে অনন্য ও বিরল।
বিশ্ব ইতিহাসের প্রতিটি বড় আন্দোলনের পেছনে আমরা দেখি একজন মহানায়কের ছায়া। একজন কেন্দ্রীয় চরিত্র, যাঁকে ঘিরেই গড়ে ওঠে আন্দোলনের কাঠামো। হেফাজতের ৬ এপ্রিল ও ৫ মে’র সেই মহানায়ক ছিলেন প্রয়াত আলেম শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী রহ.।
এমন মহানায়ক ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া ভার। তিনি ছিলেন না বজ্রকণ্ঠের বক্তা, ছিলেন না রাজনৈতিক চালনায় সিদ্ধহস্ত কোনো সংগঠক। নিজ শক্তিতে চলাচলে অক্ষম এই আল্লাহভীরু মানুষটির নামটিই ছিল গণজাগরণের শক্তি।
আজীবন হাদীসের দরস্ ও মাদরাসার দায়িত্বে থাকা সেই ‘আল্লামা শফী’র হাত ধরেই রচিত হয়েছিল বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের মহাজাগরণের ইতিহাস।
‘আল্লামা শফী’—এই নামটি জনতার হৃদয়ে যেমন সবচেয়ে সম্মানিত হয়ে উঠেছিল, তেমনি ইসলামবিরোধী শক্তির কাছে হয়ে উঠেছিল আতঙ্কের প্রতীক।
দুঃখজনক হলেও সত্য—এমন এক বিশাল জাগরণ কোনো স্বীকৃত সাফল্য ঘরে তুলতে পারেনি। ইতিহাস বলে, মহানায়ককে কেন্দ্র করে জাগরণ গড়ে উঠলেও, ফল সংগ্রহ করতে লাগে দূরদর্শী পরিকল্পনা ও দক্ষ টিমওয়ার্ক।
এই দেশের মানুষের সৌভাগ্য ছিল যে তারা একজন আল্লামা শফী পেয়েছিল, আর দুর্ভাগ্য ছিল—আল্লামা শফী পাননি সেই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা বা যোগ্য টিম।
প্ল্যান ছিলো না যে, তা নয়। ছিলো, তবে সেটা আল্লামা শফী কিংবা হেফাজতের নয়। প্ল্যান ছিলো সুযোগসন্ধানীদের।
একজন নিরেট অরাজনৈতিক মানুষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ঈমানি আন্দোলনকে রাজনীতিকরণে নিয়ে যাওয়ার ছিল সুপরিকল্পিত প্রয়াস। এই পরিকল্পনাকারীরা নিজেরা সফল না হলেও, এই মহাজাগরণকে ব্যর্থ করে দেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৬ এপ্রিলে শুরু হয়ে ৫ মে’তে শেষ হওয়া এই মহাজাগরণের পরবর্তী ইতিহাস ভিন্ন।
এই মহাজাগরণে আল্লামা শফী দেশবাসীকে একজন আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী উপহার দিয়েছিলেন। যিনি পরবর্তীতে দীর্ঘদিন হেফাজতের মিশন নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। যদিও সেই ”প্ল্যানাররা” তাকেও ব্যর্থ করতে কম প্রচেষ্টা চালায়নি। হয়তো সফলও হয়েছে…।
৬ এপ্রিল আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি ধর্মীয় আন্দোলনের ভেতরে গোপন রাজনৈতিক স্বার্থ ঢুকে পড়লে তার পরিণতি কতটা ভয়ংকর হতে পারে। রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকা দোষের নয়, কিন্তু সেটা হতে হবে স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য—গোপন নয়।
কবি আল্লামা ইকবাল এটাই যেন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন:
হাজারোঁ সাল নার্গিস আপনী বে-নূরি পে রোতি হ্যায়,
বড়ি মুশকিল সে হোতা হ্যায় চমন মে দিদাওয়ার পায়দা।
৬ এপ্রিল ২০২২
কা/ত/মা
One Response
That is very attention-grabbing, You’re a very professional blogger. I have joined your rss feed and sit up for in quest of extra of your fantastic post. Also, I’ve shared your website in my social networks!