বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ও টঙ্গী কামারপাড়া খাদেমুল কুরআন মডেল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কে এম মামুনুর রশীদ গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে নিখোঁজ। ৩৮ ঘণ্টা পার হলেও এখনো তাঁর কোনো সন্ধান মিলেনি।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের অভিযোগ—সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের আশ্রয়দান, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লেখালেখি করায় ভারতীয় নাম্বার ও আইপি অ্যাড্রেস থেকে নিয়মিত হুমকি পেতেন মাওলানা মামুন। এমনকি তাঁকে গুম করারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। অবশেষে ২২ সেপ্টেম্বর ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি।
সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, ২২ সেপ্টেম্বর, ভোর ৬টা ১০ মিনিটে তিনি বাসা থেকে বের হন এবং ৬টা ১৭ মিনিটে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ২১ নম্বর রোডে তাঁকে শেষবার দেখা যায়। এরপর তাঁর আর কোনো খোঁজ নেই। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হলেও পুলিশ এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। স্থানীয় আলেম-সমাজ জানান, আমরা র্যাব, পিবিআই এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ দিতে পারেনি, যা আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত করছে।আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, তাকে দ্রুত খুঁজে বের করে নিরাপদে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
এ ঘটনায় সাধারণ আলেম সমাজ এক বিবৃতিতে বলছে, ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর এটাই প্রথম বড় গুমের ঘটনা। এটি সরকারের জন্য লজ্জাজনক এবং জননিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়াবহ বার্তা। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন—যেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থাকার পরও এ ধরনের ঘটনা ঘটে, সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা নিরাপদ?
এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, তুরাগ যুবশক্তি (এনসিপির যুব উইং) নামের একটি গ্রুপে মামুনুর রশীদের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলটির নেতা সাব্বির। সেখানে তিনি কসম খেয়ে বলেন, “সে মামলা-মোকাদ্দমা মানে না, অপেন ফিল্ডে রাজনীতি করে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই বক্তব্য মামুনুর রশীদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় নতুন সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
আলেমরা বলছেন, নিখোঁজ আলেমকে অবিলম্বে উদ্ধার করতে হবে। একই সঙ্গে গুমকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
কা/ত/মা