মঙ্গলবার, রাত ৩:৪৯
১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি,

বিভাগের নামে আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব উসকে দেয়া হচ্ছে

|| মিযানুর রহমান জামীল ||

‎নোয়াখালী কুমিল্লাকে বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম কেন আলাদা বিভাগে পরিণত হচ্ছে? এর পেছনে নিগুঢ় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে কিনা বিষয়টা যাচাই-বাছাই করা দরকার। নোয়াখালী বা কুমিল্লা দুটো জেলাকে বিভাগ না দিলেও দেশের ওরকম কোন সমস্যা হবে না যে রকম সমস্যা বা সংকট তৈরি হবে চট্টগ্রামকে জুমল্যান্ড-ভিত্তিক বিভাগে পরিণত করলে। অথচ সেখানে আমাদের ঈমান দেশের অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে। অর্থাৎ (হিল ট্যাক্স) বা পার্শ্ববর্তী যে ৫-৬ টা জেলা আছে সেগুলো নিয়ে সমন্বিত বিভাগ হলে— পাহাড়ি অঞ্চলটা শান্তি বাহিনির একক রাজ্যে পরিণত হবে। এটা যেমন ভারতের ‘র’ এর চক্রান্তেরই অংশ হিসেবে কাজ করবে তেমনি আন্তর্জাতিক চক্রান্তের বিশেষ মনিটরিং কেন্দ্র হিসেবেও গুরুত্ব পাবে।

‎আমি যখন বাউবির শিক্ষার্থী তখন স্যারদের থেকে হিলট্যাক্স নিয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ লেকচার ও তথ্য শোনার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছি। কিছু বিষয় এমন আছে আমাদের গুরুজন সবার সামনে তা বলতে না পারলেও আলাদাভাবে কেউ জানতে চাইলে কাউকে নৈরাশ করতেন না। তবে এ কারণে তারা বদলিও হয়েছেন একাধিক। তারপরও আমাদের প্রয়োজনে এগুলোকে আলাদাভাবে জেনে নিতে হয়েছে। ভূকৌশল মূলত সেই প্রেক্ষাপটেই প্রাসঙ্গিক, যেখানে এটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলবিদের নিজ জাতি, ঐতিহাসিকভাবে প্রোথিত জাতীয় প্রেরণা, দেশের সম্পদের শক্তি, দেশের লক্ষ্যের পরিধি, নির্দিষ্ট সময়কালের রাজনৈতিক ভূগোল এবং প্রযুক্তিগত বিষয়সমূহ, যা সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে।

‎ঠান্ডা মাথায় এবার ভাবুন— দুটি জেলার দ্বন্দ্বকে উস্কে দেয়া /র/ এর দীর্ঘ দিনের হিসাবের খতিয়ান। এর পেছনে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে কাজ করছে দেশের কিছু অসাধু মহল।  যারা হিল ট্যাক্সকে ভিন্ন একটা রাজ্যে পরিণত করার দুঃসাহসিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, মূলত তারাই এর কলকাঠি নাড়াচ্ছে। ফিলিপাইন থেকে দক্ষিণ সুদান, দক্ষিণ সুদান থেকে  পূর্ব-তিমুর, সেসব রাষ্ট্র আলাদা হয়ে নিজস্ব একটা  রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। নজর দিলে বুঝতে অসুবিধা হবে না— সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা কত?

‎আওয়াজ তোলা সময়ের দাবি— কুমিল্লা বা নোয়াখালীকে, অথবা কুমিল্লা আর নোয়াখালীকে বিভাগ দিন বা না দিন— অন্তত দেশের ঐতিহাসিক পাহাড়ি অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাঁচান। বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যক্তি বা জেলাভিত্তিক বিভাজন হয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে চাই না। একটি মহল যেমন বিভাগীয় সুবিধার লোভ দেখিয়ে আমাদের দ্বারা ভিন্ন কিছু করানোর চিন্তায় বিভোর, আরেকটি মহলও রাষ্ট্রক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ তৈরিতে রাত দিন একাকার করে দিচ্ছে।

‎প্রশ্ন আসতে পারে— সেনাবাহিনীই যথেষ্ট। যদি তাই হয়; তবে কয়েকদিন আগের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সেখানে শান্তিবাহিনীর লোকেরা সন্ত্রাসী কায়দায় কী না করেছে?

‎কুমিল্লা বা নোয়াখালী আলাদা বিভাগ হলে চট্টগ্রামের পাহাড়ের শান্তিবাহিনী কর্তৃক সংকটগুলো তৈরি হলে চট্টগ্রাম নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা করার সময় থাকবে না। কারণ আমরা তখন আলাদা বিভাগের মানুষ। তাদের সংকট নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর সময় অযৌক্তিক হয়ে দেখা দেবে এবং এ মাইন্ডসেটাপ ইতোমধ্যে পরিপূর্ণ হতে চলেছে।

‎আমি আন্দোলনকে সমর্থন জানাই।  আপনারা অনেক পরিশ্রম করে এ পর্যন্ত এসেছেন। কিন্তু কিছুই করার নেই— এটা কেউ মেনে না নিলেও বাস্তব সত্য হলো এখানে মুসলমানদের ঈমান এবং ভূ-রাজনৈতিক বিষয় জড়িয়ে আছে। মূলত চট্টগ্রাম থেকে সিস্টেমে আমাদের আলাদা করে দেয়া হবে। তারপর শুরু হবে দাবার গুটির ভিন্ন কদম। এবার ভাবুন— আমরা কি আমাদের কাজ করছি? নাকি নিজেদের অজান্তে শত্রুর কাজের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

‎- আলেম, শিক্ষক, লেখক

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *