শুক্রবার, রাত ৪:২৬
৩রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি,

ঢাকার বুকে ব্যতিক্রমী এক সিরাত প্রদর্শনী

​রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির মসজিদুত তাকওয়া সোসাইটি আয়োজন করেছে এক ব্যতিক্রমী সিরাত প্রদর্শনী।

বুধবার (১ অক্টোবর) শুরু হওয়া এ সিরাত প্রদর্শনী চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত।

ব্যতিক্রমী এ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান ও পরিবেশের রেপ্লিকা, যা দর্শনার্থীদের সিরাতের প্রতি গভীর উপলব্ধি অর্জনে সাহায্য করছে।

​প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায় খেজুর পাতা দিয়ে ছাওয়া কুঁড়েঘরের মতো স্থাপনা, সে যুগের আসবাবপত্র, মাটির তৈরি পাত্র, বালু-মাটির দেয়াল ও মেঝে, প্রাচীন কূপের প্রতিকৃতি এবং সবুজ গাছপালায় সজ্জিত বসার স্থান। এই সজ্জা মরুভূমির তৎকালীন পরিবেশ এবং নবীজির সাদামাটা জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছে।

​মসজিদুত তাকওয়া-এর খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম এ ধরনের আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘সিরাত কেবল ইতিহাস নয়, এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য জীবন বিধান। বই পড়ে সিরাত জানা এক বিষয়, আর এমন বাস্তব পরিবেশে তার রেপ্লিকা দেখা সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা দেয়। আমরা চেয়েছি যেন নতুন প্রজন্ম চোখে দেখে, অনুভব করে নবীর আদর্শকে। এটি নিছক প্রদর্শনী নয়, এটি সিরাত চর্চার একটি নতুন মাধ্যম।’

​এ সিরাত প্রদর্শনীর আয়োজক মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী বলেন, এ প্রদর্শনী আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-এর জীবনের নানা দিককে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে তখনকার সময়ে তার জীবনযাপন, যে সরলতা ও পবিত্রতা নিয়ে তিনি পথ চলেছেন, তা বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয়। ছবিগুলোতে দেখা কুঁড়েঘর, পানির কূপ– এগুলো সিরাতের একেকটি জীবন্ত অধ্যায়। নবীজির প্রতি ভালোবাসা জাগাতে এমন আয়োজন খুব প্রয়োজন।

​প্রদর্শনীতে ভিড় জমিয়েছেন সব বয়সি দর্শনার্থীরা। সিরাতের এমন জীবন্ত উপস্থাপনা দেখে অনেকেই মুগ্ধ।

আব্দুল্লাহ আল মারুফ নামে এক তরুণ দর্শনার্থী বলেন, ‘আমি সিরাতের অনেক বই পড়েছি কিন্তু এ প্রদর্শনীতে এসে মনে হচ্ছে যেন ইতিহাসের সেই সময়ে ফিরে গেছি। নবীর থাকার জায়গা, পানির কূপ; সবকিছু দেখে একটা অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। সিরাত যেন চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠলো।’

​পরিবার নিয়ে আসা ফারহানা বেগম বলেন, ‘আমার সন্তানদের নিয়ে এসেছি, যেন তারা নবীজির জীবনকে কাছ থেকে দেখতে পারে। ঘরের দেয়াল, ছাদ, সবকিছু এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, মনে হচ্ছে আমরা যেন আরবের প্রাচীন কোনো বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছি। বিশেষ করে ক্যালিগ্রাফি ও কবিতার বোর্ডগুলো খুব আকর্ষণীয় ছিল।’

​মসজিদুত তাকওয়ার এই ব্যতিক্রমী সিরাত প্রদর্শনী শুধু তথ্য নয়, নবীজির আদর্শিক জীবনের এক গভীর বার্তা ঢাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য, এমনটাই মনে করেন আয়োজকরা।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *