✍️ ইমরান হুসাইন হাবিবী
এই দেশে এখন যেন এক অদ্ভুত বাস্তবতা নিত্যদিনের অভ্যেসে পরিণত হয়েছে—ইস্যু দিয়ে ইস্যু ঢাকার খেলায় মেতে উঠেছে ক্ষমতাধররা। একটি বড় সংকটে জাতি যখন প্রশ্ন করতে উদ্যত, ঠিক তখনই আরেকটি নতুন ঘটনা সামনে আসে এবং মিডিয়া ও প্রশাসন এমনভাবে সেটিকে সামনে আনে যে পুরনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি চাপা পড়ে যায়। জনগণের মনোযোগ ভিন্নখাতে প্রবাহিত হয়। যেন একটি মাসিক চক্রের মতো, বারবার।
যেমন ধরুন, হত্যাকাণ্ড দিয়ে জাতিসংঘ কার্যালয় স্থাপন ভুলে চাচ্ছে,, গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু গুলো বাস্তবায়ন কার্যকর পদক্ষেপ ও ব্যাক্তি তৈরি হয়ে গেলে ধারাবাহিক ক্ষতি থেকে জাতিকে বাঁচানো সম্ভব।
আমরা আজ এমন এক বাস্তবতায় বাস করছি যেখানে হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি, বৈষম্য কিংবা মূল্যবৃদ্ধির মতো জাতীয় সমস্যা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও, এগুলোর বাস্তব সমাধান বা দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণে কেউ আন্তরিক নয়। কারণ, সমস্যা সমাধানের আগে নতুন কোনো ‘খবর’ বা ‘কনটেন্ট’ হাজির হয়ে জাতির মানসিকতাকে ব্যস্ত রাখে। ফলে সমস্যাগুলো পচে যায়, পুরনো ঘায়ে নতুন পুঁজ জমে—কিন্তু নিরাময় হয় না।
একটা জাতি যখন স্থির থাকতে পারে না, একটা বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদে ভাবতে শেখে না—তখন তারা ধীরে ধীরে ‘সাইকো জাতি’তে পরিণত হয়। আজ আমরা সেই দিকেই হাঁটছি। আমরা ভাবি আমরা স্বাধীনভাবে চিন্তা করছি, অথচ আমাদের চিন্তাগুলো পরিচালিত হচ্ছে কারো অদৃশ্য হাতের দ্বারা। মুসলমান মাত্রই আল্লাহর দেয়া কোরআনিক দিকনির্দেশনা অনুসরণে জীবন পরিচালনা করতে বাধ্য। আর এই পথ ছেড়ে অন্য যেকোনো পথে হাঁটলেই ধ্বংস অনিবার্য।
একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন—গত এক বছরে হত্যাকাণ্ড কমেছে? আগস্ট-জুলাই মাসে কতগুলো নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে? কতগুলো প্রাণ ঝরে গেছে, যেগুলোর বিচার বা প্রতিকার আমরা দেখিনি? কিছুদিন হইচই হয়েছে, তারপর আবার চুপ। একটা চক্র যেন ঠিক ঠিক বুঝে গেছে, এই জাতির স্মৃতি দুর্বল, তারা একটু নাটকীয়তা পেলে আগের সব ভুলে যায়।
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো—জনগণ যেন নাটক দেখতেই বেশি পছন্দ করে। কেউ চোখের পানি ফেললে আমরা ভাবি তিনি আমাদের আপনজন। অথচ তার সিস্টেমের ভেতরে বসে কে কী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে, সেদিকে দৃষ্টিও দিই না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক কথাবার্তা হলেও বাস্তবে দেখা যায় বরং বিভ্রান্তিকর কর্মকাণ্ডকেই প্রমোট করা হয়েছে—অনৈতিক কাজকে “সহযোগিতা” নামে অনুদান দেয়া হয়েছে।
আজকের এই বাস্তবতা আমাদের ভাবিয়ে তোলে—বর্তমান নেতৃত্ব কাদের মূল্যায়ন করছে? শিক্ষিত, চিন্তাশীল সমাজকে নয়, বরং রাজনীতির সুবিধাভোগী কিছু গোষ্ঠী, বিদেশি আদর্শে বিশ্বাসী ও পশ্চিমা এজেন্ডাবাহী লোকজনই বেশি মূল্যায়িত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ভাবনা, কষ্ট বা অভাব নিয়ে নেতৃত্ব পর্যায়ে যেন কোনো আগ্রহই নেই।
তবে আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যদি আমরা সময় দিই, তারা হয়তো পারবে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। ইংরেজরা চলে গেছে, কিন্তু তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা রেখে গেছে। আমরা তাদের ভাষায় কথা বলি, ভাবি তাদের মতো—তবু যদি চিন্তা করার যোগ্যতা নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলতে পারি, তাহলেই কিছু সম্ভব।
জাতিকে ‘সাইকো চক্র’ থেকে মুক্ত করতে হলে এখনই চিন্তা ও কর্মের নতুন ধারা গড়ে তুলতে হবে। পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা—এই তিন স্তরে নতুনভাবে মানস গঠনের কাজ শুরু করতে হবে। প্রত্যেক তরুণ-তরুণীকে ‘ম্যান পাওয়ার’ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ শুধু পোশাক উৎপাদনের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে, আর তারা—অস্ত্র বানাবে, নিয়ন্ত্রণ করবে, আর আমরা গোলামই রয়ে যাব।
এটাই এখন জাতীয় প্রশ্ন—আমাদের ছাত্র রাজনীতি কি ভবিষ্যৎ গড়বে, নাকি পুরনো রাজনীতির বিষবৃক্ষকেই লালন করবে?
যারা ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত, তারা আজ কী শেখছে? প্রবীণ নেতাদের কাছ থেকে কী মূল্যবোধ, কী আদর্শ তারা নিচ্ছে?
ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করাটাই এখন সময়ের দাবি।
৬ Responses
Share your link and rake in rewards—join our affiliate team! https://shorturl.fm/8N5Rs
Promote our brand, reap the rewards—apply to our affiliate program today! https://shorturl.fm/4lT3Z
Promote, refer, earn—join our affiliate program now! https://shorturl.fm/aOgWF
Join our affiliate community and earn more—register now! https://shorturl.fm/TQ2bi
Your audience, your profits—become an affiliate today! https://shorturl.fm/upfmP
Your audience, your profits—become an affiliate today! https://shorturl.fm/0liVT