সোমবার, রাত ১১:৪৯
১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি,

শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে ব্যবহার করা জুলুম: বায়তুল মোকাররমের খতিব

শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে ব্যবহার করাটা তাদের ওপর জুলুম বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ইনসাফ ফাউন্ডেশনের আত্মপ্রকাশমূলক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষার্থীদের অধিকার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মাওলানা আবদুল মালেক বলেন, আমি বললে হয়তো আপনাদের কাছে তাজ্জব লাগতে পারে। ছাত্রদেরকে যে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হয়, এটা ছাত্রদের ওপর জুলুম। কলেজ ভার্সিটির ছাত্রদেরকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হয়, এটি তাদের সঙ্গে অন্যায়।

তিনি বলেন, এই যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের ছাত্র দল (সংগঠন) আছে। তারা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ব্যবহার করে। এটা ছাত্রদের উপর জুলুম। এমনকি ইসলামি দলগুলোও ছাত্রদেরকে রাজনীতিতে ব্যবহার করছে। এটা অন্যায়। এটাও তাদের ওপর জুলুম।

এসময় তিনি তার বক্তব্যে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নারী-পুরুষ সব মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও সম্মান রক্ষায় সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান।

সেমিনারটিতে ‘নারীর অধিকার ও মর্যাদা; বর্তমান বাস্তবতা: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনসাফ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শাইখুল হাদিস মাওলানা আবুল বাশার।

প্রবন্ধে তিনি বলেন, আজকের সমাজে বাবা কর্তৃক মেয়েকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। যেই মা নিজ উদরে বহন করেছেন, বুকের অমৃত পান করিয়ে নির্ঘুম প্রতিপালন করেছেন, তিনিও পর্যন্ত সম্পত্তির বেলায় অনেকক্ষেত্রে পুত্রঘেষা। আর বোনের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দেওয়ার বেলায় তার প্রিয় সহোদরদের আমরা কেমন জায়গায় দেখছি? রইলো শারীরিক সহিংসতার কথা। আজ এটা এক লোমহর্ষক বাস্তবতা! এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে, সমাজকে বের করতে হবে। ইসলামের শিক্ষাগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে। নারীর অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে এবং দাম্পত্য জীবনের সৌহার্দ্য ও সৌন্দর্যের যে শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে, এগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে।

সেমিনারে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. এবিএম হিজবুল্লাহ বলেন, বিয়েকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। তালাক ও পরকীয়ার মত বিষয়গুলোতে গণসচেতনতা তৈরিও ইনসাফের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। বিয়ের পূর্বে পাত্র-পাত্রী উভয়ের জন্য সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ করানো উচিত।

অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, নারীবাদ সূক্ষ্ম গোলক ধাঁধা তৈরি করে পুরুষের বিপক্ষে নারীকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এর ফলে যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে তার মধ্যে দিয়ে নারীর প্রতি জুলুমের ক্ষেত্রেই সম্প্রসারিত হয়েছে। নারীবাদের নামে পশ্চিমা ব্যবস্থা আসার পরে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ পরিমাণ নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এত নারী-নির্যাতন কখনোই ঘটেনি।

পুলিশের এডিআইজি নাজিবুর রহমান (অব.) বলেছেন, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করতে পারবে পুলিশ প্রশাসন। তাই পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা সবাইকে এই কাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।

বুয়েটের প্রফেসর ড. লুতফুল কবীর বলেন, শুধু সচেতনতামূলক কার্যক্রম নয়, বিপদ ঘটে যাওয়ার আগে চলমান ঘটনাগুলোকেও গুরুত্বের সাথে নেওয়া উচিত। উপযুক্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে দম্পতিদের সাথে সেশন করা, তাদের কাউন্সিলিং করাকে গুরুত্বের সাথে ইনসাফের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *