বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৭:০৪
৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি,

শাপলা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাম নেতার কটাক্ষ, শহীদ পরিবারের প্রতিবাদ

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজার মন্তব্যকে ‘শহীদদের প্রতি অবমাননা’ উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার ও স্বজনেরা। ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি তার বক্তব্যে শাপলা আন্দোলনকে ‘ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি’ হিসেবে উল্লেখ করেন-যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

এ নিয়ে রোববার বিকেলে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শহীদ বুয়েট শিক্ষার্থী রেহান আহসানের বোন ফারিয়া স্মরণী ভাষা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতির পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে শহীদ রেহান ও অন্যান্য শহীদদের জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে অপমান করা হয়েছে। একই সঙ্গে শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাকে ফ্যাসিবাদের সূচনা হিসেবে আখ্যায়িত করে হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন জানানো হয়েছে-এটি শহীদদের আত্মত্যাগ ও জাতীয় চেতনার প্রতি গভীরতর আঘাত।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের পতনধ্বনি শুরু হয়েছিল শাপলাতে। আর সুবিধাবাদী বামরা সেটাকে বলছে- ফ্যাসিবাদ। এমন কথা তিনি কেন বললেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে সেই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে আমি ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

তিনি বলেন, শাপলা হত্যাকাণ্ডের শহীদ পরিবাররা বিচার পায় না অথচ তাদেরকে আজ প্রকাশ্যে ‘ফ্যাসিবাদ’ বলে কটাক্ষ করা হচ্ছে। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি খুবই লজ্জাজনক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, “কিছু লোক শাপলা হত্যাকাণ্ডকে স্বীকার করতে চায় না। তারা উপরি উপরি স্বীকার করলেও আওয়ামী ন্যারেটিভকে ধারণ করে এই হত্যাকাণ্ডকে অস্বীকার করে, এমনকি শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করে।”

তিনি বলেন, আমাদের শহীদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা আমাদের গর্বের প্রতীক। তাদেরকে কোনোভাবেই অবমাননা করা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, সেই বাম নেতা যে মন্তব্য করেছে তা অত্যন্ত হীন মন্তব্য। তকে অবশ্যই তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “শাপলা চত্বরে অবশ্যই ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি ছিল।” তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নিহতদের পরিবার অভিযোগ করে, এ ধরনের মন্তব্য সাম্প্রদায়িক বিভাজন উসকে দেয় এবং ৫ মে’র ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে।

প্রসঙ্গত, ব্লগারদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা ও নারীনীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। রাতের অভিযানে ব্যাপক গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। হেফাজতের দাবি অনুযায়ী, ওইদিন অন্তত ৯৩ জন নিহত হন।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *