রবিবার, রাত ৪:৪৯
১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি,

ঢাকায় খতমে নবুওয়ত সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের খ্যাতনামা ১২ আলেম

আগামীকাল শনিবার (১৫ নভেম্বর) ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন। এতে যোগ দিতে এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে খ্যাতনামা ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী চিন্তাবিদরা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনের (বাংলাদেশ) মিডিয়া সমন্বয়ক বিভাগ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়ছে, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন বিদেশী ৮ আলেম। এরই মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মুফতি ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (ভারত) সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি, পাকিস্তানের ইউসুফ বিন্নুরী টাউন মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম ড. আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরী ও জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মাওলানা ইলিয়াছ গুম্মান।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় এসেছেন ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিম।

সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম মাওলানা খলিল আহমাদ কুরাইশী, আল হাইয়াতুল উলিয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল মালেক। এ ছাড়া দেশের খ্যাতিমান আরো অর্ধশতাধিক আলেম সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

এরই মধ্যে গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে সম্মেলনটির অনুমতি পাওয়া গেছে বলে জানান মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

দেশী-বিদেশী খ্যাতিমান আলেমদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই মহাসম্মেলনকে ঘিরে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা রক্ষায় বৈশ্বিক ঐক্যের এই সম্মেলনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এক ঐতিহাসিক দৃশ্যে পরিণত হবে, ইনশাআল্লাহ।

সম্মেলনে সকল ঈমানদার মুসলিমদের উপস্থিত থেকে খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা সংরক্ষণের আহ্বানে শামিল হওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মাওলানা আবদুল হামিদ মধুপুরী।

তিনি বলেন, কাদিয়ানি মতবাদ ইসলামের মৌলিক আকিদার পরিপন্থী। বিশ্বের বহু ইসলামী সংগঠন ও রাষ্ট্র তাদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ এ বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে এখনো রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি—যা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষুণ্ন করছে।

তিনি আরো বলেন, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী মনে করা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ‘খতমে নবুওয়ত’র পরিপন্থী। আমরা আশা করছি, ১৫ নভেম্বরের এই সম্মেলন থেকে খতমে নবুওয়ত বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর চেতনা নতুন করে জাগ্রত হবে। বাংলাদেশ সরকারও কাদিয়ানিদের অমুসলিম হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা দেবে।

উল্লেখ্য, ‘খতমে নবুওয়ত’ শব্দ দুটি আরবি শব্দ। খতম অর্থ শেষ বা সমাপ্তি, আর নবুওয়ত অর্থ পয়গম্বরী, নবিত্ব। সুতরাং খতমে নবুওয়ত অর্থ নবীগণের সমাপ্তি। ইসলামী পরিভাষায় মুহাম্মদকে সা: শেষ নবী হিসেবে মেনে নেয়াকে খতমে নবুয়ত বলে।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *