সোমবার, রাত ১২:১৪
২০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি,

মেট্রো চলাচলের সময় বাড়ল আরও এক ঘন্টা

মেট্রোরেল চলাচলের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় প্রথম ট্রেন চালুর মাধ্যমে নতুন সময়সূচি কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে প্রতিদিন সকালে মেট্রোরেল চালুর সময় ও রাতে বন্ধের সময় আধা ঘণ্টা করে বাড়ানো হয়েছে। সময় বাড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।

উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে প্রতিদিন চার লাখের বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। যাত্রীরা ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, ট্রিপ বাড়াতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সব ঠিক থাকলে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ট্রিপ বাড়ানো সম্ভব হবে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় উত্তরা-উত্তর মেট্রো স্টেশন থেকে মতিঝিলের উদ্দেশে প্রথম ট্রেন ছাড়ে। যা এতদিন ছাড়তো সকাল ৭টা ১০ মিনিটে। রাতে মতিঝিল থেকে ট্রেন ছাড়বে রাত ১০টা ১০ মিনিটে। শুধু তাই নয়, সপ্তাহের শুক্রবার মেট্রোরেল চালু হবে আগের বিকেল ৩টার বদলে আড়াইটায়।

এ ছাড়া এখন শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হয়। নতুন সূচিতে সময় আধঘণ্টা এগিয়ে বেলা আড়াইটায় চলাচল শুরু হবে। আর রাতে চলাচলের সময় বাড়বে আধা ঘণ্টা।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে চালানোর জন্য এখন ২৪ সেট ট্রেন আছে। প্রতি সেটে ছয়টি কোচ। বর্তমানে ১২ সেট ট্রেন সার্বক্ষণিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। ট্রিপের সংখ্যা বাড়ালে সার্বক্ষণিক ১৯ সেট ট্রেন ব্যবহার করা হবে বলে জানায় ডিএমটিসিএল সূত্র।

এর আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) মেট্রোরেল নির্মাণ-পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ট্রেন চলাচলে সময় বাড়ানোর বিষয়টি জানায়।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে চলতি বছরের গত সেপ্টেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে সেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। ট্রিপও বাড়ানো হবে। কিছুদিন পরীক্ষামূলক চলাচল করতে হবে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে ট্রিপ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন।

একটি ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের ব্যবধান (হেডওয়ে) কত মিনিট হবে, তা এখন তিনটি স্তরে ভাগ করা আছে।

দুই সেট ট্রেন সব সময় ওয়ার্কশপে রাখা হয়। এগুলো দিয়ে চালকের নানা পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। এ ছাড়া সকালে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরুর আগে লাইন পরীক্ষার জন্য এক সেট ট্রেন যাত্রীবিহীন চালানো হয়।

ব্যস্ত সময়ে (পিক আওয়ার) এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের ব্যবধান ছয় মিনিট। অর্থাৎ ব্যস্ত সময়ে প্রতি ছয় মিনিট পরপর ট্রেন আসে।

বর্তমানে মেট্রোরেলে দৈনিক গড়ে সাড়ে চার লাখ যাত্রী চলাচল করেন। সময় বাড়ানোয় যাত্রীসংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ লক্ষ্য নিয়েই ডিএমটিসিএল প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কম ব্যস্ত সময়ে (অফ-পিক আওয়ার) প্রতিটি ট্রেনের সময়ের ব্যবধান ৮ মিনিট। আর একেবারেই কম ব্যস্ত সময়ে (সুপার অফ পিক আওয়ার) ১০ মিনিট ব্যবধানে ট্রেন চলাচল করে।

বর্তমানে সারা দিনে ২৩৮ বার মেট্রোরেল যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের ব্যবধান কমে গেলে ট্রিপের সংখ্যা বাড়বে। তখন যাত্রীদের অপেক্ষার সময় আরও কমবে। অর্থাৎ আরও দ্রুত ট্রেন পাওয়া যাবে।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। শুরুতে চলাচল করত উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে স্টেশনের সংখ্যা বাড়ে। মতিঝিল পর্যন্ত সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা শুরু হয় ২০২৩ সালের শেষ দিনে। এখন কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

২০১২ সালে অনুমোদনের সময় মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) কাছ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে।

মেট্রোরেলের নিয়মিত যাত্রী ট্রাভেল এজেন্সির কর্মকর্তা আরশাদুল হক। তিনি বলেন, যানজটের শহর ঢাকায় মেট্রোরেলের যাত্রী–চাহিদা ব্যাপক। তাই মেট্রোরেলের চলাচল সময় ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হলে তা যাত্রীদের জন্য ভালোই হবে।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *