মঙ্গলবার, রাত ৩:৫৫
১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি,

জেন-জি বিক্ষোভের মুখে এবার দেশ ছেড়ে পালালেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট

জেন-জিদের টানা বিক্ষোভের মুখে অবশেষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। ফরাসি রেডিও আরএফআই জানায়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক গোপন চুক্তির পর তাকে ফরাসি সামরিক বিমানে করে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

রয়টার্স জানায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে চলছিল দুর্নীতি, দারিদ্র্য ও সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে তরুণদের (জিন-জি দের) নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ। রাজধানী আন্তানানারিভোসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নামে। এর মধ্যেই সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ‘ক্যাপসাট’ প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্য প্রত্যাহার করে বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে রাজোয়েলিনা ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এবং প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।

বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর, যখন রাজধানীতে পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামেন। অল্প সময়েই সেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে—দুর্নীতি, খারাপ শাসন ও মৌলিক সেবার ঘাটতির বিরুদ্ধে এক বিশাল গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এটি।

বিরোধীদলীয় নেতা সিতেনি র্যান্দ্রিয়ানাসোলোনিয়াইকো জানিয়েছেন, সংসদের বিরোধী সদস্যরা ইতিমধ্যে রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রোববার প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে “ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র” চলছে। যে ক্যাপসাট ইউনিট ২০০৯ সালে তাঁকে ক্ষমতায় আনতে সহায়তা করেছিল, সেই একই ইউনিট এবার তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ইউনিটটি ঘোষণা করেছে, তারা এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে এবং নতুন সেনাপ্রধানও নিয়োগ দিয়েছে।

এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আরও কিছু অংশ ও আধাসামরিক বাহিনী (প্যারামিলিটারি) বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে মাঠে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কার্যত ভেঙে পড়ে।

জনরোষের মুখে সিনেট সভাপতি জ্যাঁ আঁদ্রে ন্দ্রেমাঞ্জারিকে সাময়িকভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট অনুপস্থিত থাকলে সিনেট সভাপতি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে সোমবার হাজারো মানুষ একত্রিত হয়ে স্লোগান দেন—“প্রেসিডেন্টকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।” বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২২ বছর বয়সী এক হোটেলকর্মী বলেন, “আমি মাসে ৩ লাখ আরিয়ারি (প্রায় ৬৭ ডলার) আয় করি। এত টাকা দিয়ে শুধু খাবার জোটানোই কঠিন। ১৬ বছরে সরকার শুধু নিজেদের ধনী করেছে, আমরা তরুণরা আরও গরিব হয়েছি।”

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *