শুক্রবার, সকাল ৭:১৫
৩রা অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি,

১০ বছরে প্রাণ গেছে ২৪ ফায়ার সার্ভিসকর্মীর, আহত ৩৮৬

গাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শামীম আহমেদ (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল। এছাড়াও, এ ঘটনায় আরও একজনের শরীরের ১০০ শতাংশ এবং একজনের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। দুজনের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গত দশ বছরে অপারেশনাল কাজে নিহত ফায়ার সার্ভিসকর্মীর সংখ্যা ২৩ জন। টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ফায়ার ফাইটার শামীমকে ধরলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২৪ জনে। আর এই সময়ে (২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত) আহত ফায়ার সার্ভিসকর্মীর সংখ্যা ৩৮৬ জন।

জানা যায়, ১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল তৎকালীন ফায়ার সার্ভিস পরিদফতর, সিভিল ডিফেন্স পরিদফতর এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদ্ধার পরিদফতরের সমন্বয়ে বর্তমান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হন ৪৬ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মী। এছাড়াও, ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৬৬, ১৯৭১ ও ১৯৭৩ সালে আরও ৩ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মীর প্রাণহানি ঘটে।

নিহত এই ৪৯ ফায়ার সার্ভিসকর্মীর মধ্যে ফায়ার ফাইটার রয়েছেন ৩৫ জন, গ্রুপ লিডার ৭ জন এবং ড্রাইভার ৩ জন। এছাড়া, একজন রয়েছেন সিনিয়র স্টেশন অফিসার, স্টেশন অফিসার, ডুবুরি ও নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট।

সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ডে। ২০২২ সালের ৪ জুন সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মী নিহত হন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর একসঙ্গে এতো ফায়ার সার্ভিসকর্মীর নিহতের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া, অপারেশনাল কাজে ২০০৮ সালে ৪ জন এবং ২০০০ সালে ৩ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মীর প্রাণহানি ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়াধীন একটি জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম জনগণের সেবায় নিবেদিত।

আগুন লাগার ঘটনা অথবা অন্য কোনো দুর্বিপাকে ফোন পেলেই যারা ঝড়ের বেগে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে আসেন, যারা আগুনের সাথে নিরন্তর যুদ্ধ করে অন্যের জীবন বাঁচান, তাদের জীবনের দাম কতটুকু? চাকা পাংচারের মতো তাদের জীবন প্রদীপ কেন নেভে আকস্মিক? দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আর কোনো ফায়ার সার্ভিসকর্মীর প্রাণ ঝরে না পড়ুক, এইটুকু চাওয়া নিশ্চয়ই বেমানান নয়।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *