মঙ্গলবার, দুপুর ২:৫৫
১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি,

ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘নাজায়েজ’ নাটকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ

রেজা মাহমুদ-কাফির বিরুদ্ধে দর্শকদের ক্ষোভ

সম্প্রতি ঈদে ইউটিউব ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া রেজা মাহমুদ পরিচালিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফি ও নায়িকা ঊর্মি অভিনীত ‘নাজায়েজ’ নাটকটি ইতোমধ্যে ধর্মপ্রাণ সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

সমালোচকরা মনে করেছেন, ধর্ম, নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন এই নির্মাতা। একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের প্রেক্ষাপটে তৈরি এমন একটি কনটেন্ট, যেখানে অবৈধ সম্পর্ককে ‘রোমান্টিক’ ও ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এবং ইসলামের পবিত্র আয়াতকে নাটকীয় প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করে তা অবমাননার রূপ দেওয়া হয়েছে-এটি নিঃসন্দেহে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদযোগ্য।

 

অভিযোগের কেন্দ্রে কেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি ও নির্মাতা রেজা মাহমুদ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুগ্ধ সরকার লিখেন, নাটকের অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয়কারী নুরুজ্জামান কাফি একজন তরুণ কনটেন্ট ক্রিয়েটর, তার ভূমিকা ছিল একটি স্পষ্ট বার্তা বহনকারী-ইসলামী নৈতিকতা ও সামাজিক শৃঙ্খলাকে তুচ্ছ করে অবৈধ সম্পর্ককে গ্রহণযোগ্য রূপে উপস্থাপন। তদ্রূপ, নাটকের অন্য একটি মুখ্য চরিত্রে থাকা রেজা মাহমুদের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে গুরুতর অভিযোগ, যেখানে তাকে ইসলামের পবিত্র শিক্ষা ও কুরআনের আয়াত নিয়ে নাট্যতাত্ত্বিক ও বিদ্রুপপূর্ণ পদ্ধতিতে উপস্থাপন করতে দেখা যায়। এ ধরনের কাজ শুধু ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের হৃদয়ে আঘাত করে না, বরং প্রজন্মের চিন্তা-চেতনায় ইসলামবিদ্বেষী মানসিকতা ঢুকিয়ে দেয়।

বিচারযোগ্য কিছু দিক বিশ্লেষণ করে নুসাইবা মীম বলেন, অবৈধ সম্পর্ককে ‘স্বাভাবিক’ ও ‘সুন্দর’ হিসেবে তুলে ধরা: নাটকে প্রেমের আড়ালে অবৈধ সম্পর্কের যে বৈধতা তৈরি করা হয়েছে, তা ইসলামী মূল্যবোধ ও সমাজের নৈতিক ভিত্তির সরাসরি বিপরীতে। এর ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে হারামকে হালাল হিসেবে দেখা শুরু হতে পারে। ধর্মীয় অনুভূতিতে অবমাননা : কুরআনের আয়াতকে নাটকীয় দৃশ্যপটের অংশ বানিয়ে বিদ্রুপ করা হয়েছে -যা স্পষ্টতই ইসলামের পবিত্রতা লঙ্ঘনের শামিল। একজন মুসলমানের জন্য এই কাজ অমার্জনীয় অপরাধের মতোই বিবেচিত। কোনো দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা নেই: নাটকের শেষে কোনো তওবা, অনুশোচনা কিংবা নৈতিক শিক্ষা দেখা যায়নি। বরং অবৈধ সম্পর্ক ও তার পরিণতির নাটকীয়তা কাহিনীর আকর্ষণ বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে। তরুণদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা: যেহেতু তরুণ প্রজন্ম এখন সবচেয়ে বেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, এমন নাটক তাদের জীবনের চেতনায় ভিন্নধর্মী ও বিপদজনক বার্তা প্রভাব ফেলতে পারে। নির্মাতাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার ঘাটতি: একটি সমাজ গঠনে গণমাধ্যম ও সংস্কৃতির বিশাল ভূমিকা থাকে। কিন্তু “নাজায়েজ” নাটকের নির্মাতারা সচেতনভাবে সমাজের মূল্যবোধকে আঘাত করে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শকদের দাবিসমূহ
এক. নাজায়েজ নাটকটি সম্প্রচারসহ ইউটিউব থেকে বন্ধ ও প্রত্যাহার করতে হবে
দুই. অভিনেতা ও নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও নৈতিক অবক্ষয়ের অভিযোগে সাংস্কৃতিক তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
তিন. ভবিষ্যতে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট যাতে অনুমোদন না পায়, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধান ও জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

-কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *