চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদরের শাহ মজিদিয়া রশিদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানা মাদ্রাসায় সাত বছরের শিশু মো. সোহানকে নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। টাকা চুরির অভিযোগে তার হাত গরম পানিতে চোবানো হয়। এতে হাত ঝলসে গুরুতর ক্ষত তৈরি হয়। যথাযথ চিকিৎসার অভাবে সেখানে সংক্রমণ হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, শিক্ষক জাবেদের নির্দেশে এ নির্যাতন চালানো হয়। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, অভিযোগ সত্য নয়।
সোহানের পরিবারের দাবি, ১৯ আগস্ট রাতে এ ঘটনা ঘটলেও প্রথম তিন দিন তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সোহানের অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিবারকে জানানো হয়, সোহান অসাবধানতাবশত গরম পানিতে হাত ঢুকিয়েছে।
সোহানকে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তার মামা শওকত আবরার বলেন, টাকা চুরির অভিযোগে জাবেদ (হেফজখানার শিক্ষক) হুজুরের নির্দেশে সোহানের হাত গরম পানিতে চোবানো হয়। তিনদিন পর্যন্ত আমাদেরকে জানানো হয়নি। ২২ আগস্ট সকালে আমাদের জানান। পরে কথা বলে জানতে পেরেছি সোহানকে গরম পানিতে চোবানো হয়। টাকা চুরির অভিযোগে তাকে এই শাস্তুি দেওয়া হয়। মূল ঘটনা না বলার জন্য সোহানকে ভয় দেখানো হয়।
শওকত আবরার আরও অভিযোগ করেন, আড়াই মাস আগে সোহানের ডায়রিয়া হয়। তখন জাবেদ হুজুর জানতে চান গন্ধ কেন আসছে। তখন শিক্ষার্থীরা সোহানের থেকে গন্ধ উঠছে বলে জানান। তখন সোহানকে ধরে মাটিতে ছুঁড়ে মারেন হুজুর। এসময় সোহানের কপাল ফেটে যায়। পরে এক্সরে করে দেখা যায়, সোহানের বুকের হাড় ভেঙ্গে গেছে। দেড় মাস পর্যন্ত চিকিৎসা করাতে হয়।’
সোহানের বরাত দিয়ে শওকত আবরার বলেন, অনেকবার সোহান বলেছিল ওই মাদ্রাসায় পড়বে না। আমরা এতে ছোট একটা বাচ্চা কি বুঝবে ভেবে আমরা পাত্তা দেইনি। তার বাবার আর্থিক অবস্থা খুব নাজুক। আমি তার পড়াশোনার বিষয়টি দেখভাল করেছি। আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে জড়িতদের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসহাককে ফোন দিলে এক মহিলা রিসিভ করেন, ইসহাক ঘুমাচ্ছেন বলে জানান।
মসজিদের ইমাম করিম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা তার হাত গরম পানিতে চুবিয়েছেন বলে জেনেছি। তবুও শিক্ষক জাবেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালনা কমিটি। গতকাল পুলিশও তদন্ত করতে এসেছিল। আমরা সোহানের চিকিৎসার জন্য কথা বলেছি।
আছাড় দিয়ে সোহানের পাঁজরের হাড় ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি তার আমাদের জানায়নি, এখন শুনতেছি।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বলেন, গরম পানিতে হাত চোবানোর বিষয়টি সত্য। আমরা প্রাথমিক তদন্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী এই ঘটনায় জড়িত বলে জেনেছি।
কা/ত/মা