শুক্রবার, দুপুর ১:০১
৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি,

গুগল ট্রান্সলেটরই এখন তাদের ভরসা!

প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে ভার্চ্যুয়াল হ্যালো ট্যাক অ্যাপের মাধ্যমে প্রথমে বন্ধুত্ব ও পরে প্রেমের আলাপন। কিন্তু এরপর কাছাকাছি এসে একসঙ্গে বসেও একে-অপরের মনের ভাব প্রকাশ করতে ভরসা করতে হচ্ছে গুগল ট্রান্সলেটের ওপর।

বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, আর প্রেম থেকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরও একে অপরের ভাষা না বোঝায় এখন গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমেই মনের ভাব প্রকাশ করছেন বাংলাদেশি তরুণী সুরভী আক্তার (১৯) ও চীনা তরুণ ইয়ং সাও সাং (২৬)।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কাজীপাড়া শিমুলতলা গ্রামে সুরভী আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় পাশাপাশি চেয়ারে বসে আছেন সুরভী আক্তার ও ইয়ং সাও সাং। দুজনের হাতে দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন।

নবদম্পতি হিসেবে পরিচয় দেওয়া ভিনদেশি তরুণ ও বাংলাদেশি-তরুণী একে অপরের চোখে চোখ রাখলেও মনের ভাব প্রকাশের সময় তাকাচ্ছেন মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের দিকে। কারণ সুরভী বোঝেন না চীনা ভাষা, আর ইয়ং সাও সাং বোঝেন না বাংলা ভাষা। তাই আলাদা ভাষাভাষী এই তরুণ-তরুণীর সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ালেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নিজেদের মনের ভাব আদান প্রদানে নির্ভর করতে হচ্ছে ডিভাইসের ওপর।

জানা গেছে, প্রেমিক যুবক ইয়ং সাও সাং পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার (নির্মাণ)। তার বাড়ি চীনের জিয়াংসু প্রদেশে। প্রায় ১ বছর আগে ভার্চ্যুয়াল হ্যালো ট্যাক অ্যাপসের মাধ্যমে বাংলাদেশি তরুণী প্রেমিকা সুরভী আক্তারের (১৯) সঙ্গে পরিচয় হয়।

সুরভী আক্তার বিরল উপজেলার রাণীপুকুর ইউপির কাজিপাড়া শিমুলতলা গ্রামের অটোচালক নুর হোসেন বাবু ও গৃহিণী সাথী আক্তারের মেয়ে। সুরভীরা দুই বোন।

সুরভী আক্তার জানান, তাদের দুজনের পরিচয় হওয়ার পর ভার্চ্যুয়াল যোগাযোগের মাধ্যমে ফ্রেন্ডশিপ থেকে রিলেশনশিপ গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ইয়ং সাও সাং গত ৪ আগস্ট চীন থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসে। পরে এক হুজুরের (মৌলভি) কাছে গিয়ে সে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। পাশাপাশি ইসলামি শরিয়া মোতাবেক দুজনেই বিয়ে করেন। ১০ আগস্ট সুরভী আক্তারের বাড়িতে নিজ গ্রামে বিরলের কাজিপাড়ায় চলে আসে।

সুরভী জানান, এখন পর্যন্ত আমরা একে অপরের ভাষা না বোঝায় গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে কথা বলি।

সুরভীর ছোট বোন রিয়া আক্তার বলেন, আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার দুলাভাই চীনের। আমি দুলাভাইয়ের সঙ্গে মোবাইলে ট্রান্সলেট করে কথা আদান-প্রদান করি।

স্থানীয় আজম হোসেন বলেন, বিদেশি জামাই আমাদের ভাষা বোঝে না, আমরাও তার ভাষা বুঝি না। সে মোবাইলে কথা বলাবলি (গুগল ট্রান্সলেট) করছে। তারা সুখে জীবনযাপন করুক এই দোয়া করি।

সুরভীর পরিবারের লোকজন বেশ খুশি। একনজর ওই দম্পতিকে দেখতে ভিড় করছেন ওই বাড়িতে।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *