মঙ্গলবার, সকাল ৯:৫৬
১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি,

গাঁজা ব্যবসায় নিজ গাড়ি বিনিয়োগ করলো সাংবাদিক 

বিশেষ প্রতিনিধি,গণতদন্ত: ঈদুল আজহার মাত্র ৬ দিন আগে ১ জুন ২০২৫ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রহবল এলাকায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে ৬১ কেজি গাঁজাসহ একটি প্রাইভেট কার জব্দ করেছে র্যাব-১২। এ সময় গাড়িচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– লালমনিরহাট সদর উপজেলার ইটাপোতা এলাকার সুলতান মাহমুদের ছেলে মিলন বাবু (২৩), মনছুর আলীর ছেলে সোহেল রানা (২৬) এবং সুরুজ মিয়ার ছেলে সুজন বাদশা (২৪)।

 

সংঘবদ্ধ অপরাধীরা মহাসড়ক পথে প্রাইভেট কারে অভিনব কায়দায় মাদক পাচার করছিল বলে গণমাধ্যমকে জানান র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক।

এ ঘটনায় পরের দিন ২ জুন জব্দ আলামতসহ আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অধীনে মামলা করেন র্যাবের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. কামাল হোসেন।

 

লালমনিরহাট টু ঢাকায় গাঁজার ব্যবসায় বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাংবাদিকের প্রাইভেট কার: 

এদিকে গাঁজাসহ জব্দ প্রাইভেট কার এবং গ্রেপ্তারকৃতদের র্যাবের হাত থেকে বের করতে মরিয়া হয়ে উঠে ঢাকার বিজনেস স্ট্যান্ডর্ড নামে একটি বাণিজ্যিক ইংরেজি পত্রিকার এডিটর এনাম আহমেদ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ এডিটর শাহরিয়ার খান এবং বিশেষ প্রতিনিধি জেবুন্নেসা আলো।

 

২ জুন ২০২৫ সোমবার, জেবুন্নেসা আলো দৈনিক প্রথম আলো অফিসে গিয়ে অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক, যিনি আগে বিজনেস স্ট্যান্ডর্ড পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন, তাঁর কাছে গিয়ে জব্দ হওয়া গাড়ি এবং আটককৃতদের ছাড়ানোর জন্য র্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন মহলে তদবির করতে ব্যস্ত থাকেন।

র্যাব সূত্র জানা যায় যে, চেকপোস্ট অভিযানে মাদকসহ জব্দ প্রাইভেট কারটি মিতসুবিশি ল্যান্সার মডেলের। প্রাইভেট কারটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-খ-১৩-১১৬০।

 

বাংলাদেশ রোড রোড ট্রান্সপোট অথরিটির তথ্য মতে, গাড়িটির মালিক মোছাঃ জেবুন নেসা। মালিকের ঠিকানা: ১৮, দিলু রোড, মগবাজার, ঢাকা। মালিকের যে ফোন নম্বর দেয়া হয়েছে- সেটি বিজনেস স্ট্যান্ডর্ডের বিশেষ প্রতিনিধি জেবুন্নেছা আলো’র নামে নিবন্ধিত। এছাড়া গণতদন্ত করে জানা যায়, জেবুন্নছা আলো মগবাজারের দিলু রোডেই থাকেন।

তবে তিনি ঢাকার দিলু রোডে থাকলেও তাঁর গাড়িটি লালমনিরহাট টু ঢাকা গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক ব্যবসায় ব্যবহার হতো বলে জানায় র্যাবের সূত্রটি।

 

আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে যে জব্দকৃত মোট ১০টি প্যাকেটে ৬১ কেজি গাঁজা ঈদের আগে ঢাকার কয়েকটি বিদেশী দূতাবাসের এবং বেশ কিছু ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে ডেলিভারী দেয়ার জন্য লালমনিরহাট থেকে ঢাকায় পরিবহন করা হচ্ছিল।

সংবাদপত্রের লোগো ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রাইভেট কারে উত্তরের সীমান্ত জেলা থেকে ঢাকায় অভিজাত মহলকে টার্গেট করে এই গাঁজার ব্যবসা চলে আসছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে র্যাব।

 

র্যাব আরও জানায়, এই দলটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ, যারা দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে ‘গণমাধ্যম’ স্টিকার লাগিয়ে নিরাপদে মাদক পাচার করে আসছিল।

বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রভাবশালী সাংবাদিক আলোর এই মাদক ব্যবসায় প্রধান সহযোগী হিসেবে ছিলেন–গ্রেপ্তারকৃত মিলন বাবু।

 

কে এই আলো?

ঢাকার একটি কলেজ থেকে পাস করা জেবুন্নছা সাংবাদিকতা শুরু করে আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার মাধ্যমে। এরপর যোগ দেন ঢাকা ট্রিবিউন নামের ইংরেজি। তবে তার কপাল খুলে যায় ডেইলি স্টার-পত্রিকার সাবেক নির্বাহী সম্পাদক এনাম আহমেদের ছোঁয়ায়। নিজ স্ত্রীরির সাথে সেপারেশনের সুযোগে আলোকে কাছে টেনে নেন এনাম আহমেদ। বিনিময়ে ট্রিবিউন থেকে আলোকে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ডেইলি স্টারের নিয়োগ দেন। যদিও জেবুন্নেছা আলোর রিপোর্টিং দক্ষতা নিয়ে তখন থেকেই অনেক প্রশ্ন ছিল।

পরবর্তীতে এনাম ডেইলি স্টার থেকে চাকরি ছেড়ে ওরিয়নের অর্থায়নে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড নামে নতুন ইংরেজি পত্রিকা চালু করেন। ডেইলি স্টারে নাকানি চুবানি খেতে থাকা আলোকে একাধিক পদোন্নতি দিয়ে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে নিয়োগ দেন এনাম।

 

নাম প্রকাশে অনাগ্রহী পত্রিকাটির একাধিক সংবাদ কর্মী জানান যে, আলো মূলত এনামের ছায়ায় চলেন এবং তার খাতিরেই তিনি বিশেষ সুবিধা ভোগ করেন। একাধিক সহকর্মীর দাবি, মানসম্মত কোন কাজ না করলেও আলো সব সময় এনামের চোখের মনি।

 

এডিটরের সাথে বিশেষ সখ্যতার কারণে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সহকর্মীরা আলোকে ‘টিবিএস-র বেগম সাহেবা’ নামেও উপাধি দিয়েছেন। এনামকে রাজি খুশি করে আলো এককভাবে সব ফেলোশিপও ভাগিয়ে নেন।

 

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *