বুধবার, রাত ৮:০১
৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি,

আল্লামা সাঈদীর দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী আজ

বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন, খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট)।

২০২৩ সালে আজকের এই দিনে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে- বিএসএসএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট বিকালে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে আল্লামা সাঈদীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে বিএসএসএমইউতে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু বরণ করেন আল্লামা সাঈদী। তার মৃত্যুর পর থেকে পরিবার এবং জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ করা হয়েছে ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

আল্লামা সাঈদীর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ জমিয়তে মুফাসসিরিন, বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরিন, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মুফাসসির পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র কল্যাণ পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে কর্মসূচি পালন করা হবে।

 

যে মামলায় কারাগারে ছিলেন মাওলানা সাঈদী

 

২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সাজানো মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ হাসিনার তৈরি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে, ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার হন আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী। পরে একই বছরের ২ আগস্ট কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

 

সংক্ষিপ্ত জীবনী

 

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সুবহে সাদিকের সময় পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর উপজেলার সাঈদখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা ছিলেন। ‘সাঈদী’ তার পারিবারিক উপাধি। ১৯৫৭ সালে দাখিল পাসের সার্টিফিকেটে তার নাম ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’। সেখানে তার পিতার নামেও ‘সাঈদী’ রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৬৪ সালে যশোরের একটি তাফসীর মাহফিলের লিফলেটে নাম রয়েছে ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’।

মাওলানা সাঈদীর পিতা ইউসুফ সাঈদী স্বনামধন্য ইসলামী পণ্ডিত বা আলেম ছিলেন। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মায়ের নাম গুলনাহার বেগম। তার চার ছেলে হলেন মরহুম রফিক সাঈদী, শামীম সাঈদী, মাসুদ সাঈদী ও নাসিম সাঈদী।

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিতার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন। পরে তিনি খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় কিছুদিন এবং পরে ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাস করেন। কামিল পাস করার পর বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি, মনোবিজ্ঞান ও বিভিন্ন তত্ত্বের উপর দীর্ঘ ৫ বছর অধ্যয়ন করেন। জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান

১৯৭৯ সালে সাধারণ সমর্থক হিসেবে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বাংলাদেশ জামায়াত-ই-ইসলামীতে যোগদান করেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পালন করেন।

মাওলানা সাঈদী পবিত্র কোরআনের তাফসির করেছেন। তার এ তাফসির ‘তাফসিরে সাঈদী’ নামে পরিচিত। ইতোমধ্যেই এ তাফসিরের ৫ খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তাফসিরের বাকি কাজ চলমান রয়েছে। তিনি ৫৮৪ পৃষ্ঠায় মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) এর জীবনীমূলক গ্রন্থ ‘সীরাতে সাইয়্যেদুল মুরসালিন’ রচনা করেছেন। এ ছাড়াও ফিকহুল হাদিস, কুরআন এবং বিজ্ঞান, ইসলামে নারীর অধিকার, ইসলামে শ্রমিকের অধিকার, ইসলামের রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ইসলামসহ নানা বিষয়ে এ পর্যন্ত তার ৭৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকা ও লন্ডন থেকে তার ৪টি বই ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।

কা/ত/মা

Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *